1. murshedkamalmizan@gmail.com : অভিযান নিউজ টিভি : অভিযান নিউজ টিভি
  2. info@www.ovizannewstv.com : অভিযান নিউজ টিভি :
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঝালকাঠিতে খাল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার ঝালকাঠির রাজাপুরে গুম-খুনের ঘটনায় তদন্ত শুরু করলো গুম-খুন কমিশনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিজলা উপজেলায় খালের পানিতে পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু খুলনার দাকোপে তরমুজ মৌসুমে নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় চলছে খাল দখলের মহা-উৎসব নরসিংদীর শীলমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় নরসিংদীর শীলমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় খুলনায় বাংলাদেশে মন্ট্রিল প্রোটোকল বাস্তবায়নে বিভাগীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রের দায়িত্বে কে যাবে সেই ফয়সালা আল্লাহ করবেন : আমিরে জামাত নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিসি অফিসে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে মতবিনিময় সভায় ইসলামী আন্দোলন নরসিংদীর শিবপুরে সোনালী ব্যাংকের সুইপার মোবারকের দুই কোটি টাকার শেয়ার উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা

দুশ্চিন্তা নিয়ে সুন্দরবনে যাচ্ছেন মৌয়ালরা মধু আহরণ শুরু

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ শামীম হোসেন- স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্বের সর্ববৃহৎ লোনা পানির (ম্যানগ্রোভ) বন সুন্দরবনে গত ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে মধু আহরণ। মৌসুম চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। মধু সংগ্রহ করতে মৌয়ালদের যেতে হয় সুন্দরবনের গভীরে। তবে অনেক বছর পর হঠাৎ বনদস্যুদের উৎপাত বাড়ায় এ বছর দুশ্চিন্তা নিয়ে বনে যেতে হচ্ছে মৌয়ালদের। খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলাগুলোর বেশিরভাগ মানুষ সুন্দরবনেও ওপর নির্ভরশীল। এ অঞ্চলের মানুষের অন্যতম আয়ের উৎস সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া ধরা ও মধু আহরণ। তবে বর্তমানে বনদস্যুদের কারণে স্থানীয় জেলে-বাওয়ালী ও মৌয়ালদের জীবিকায় প্রভাব পড়ছে। গত ১ এপ্রিল মধু আহরণের মৌসুম শুরুর প্রথম দিন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের নলীয়ান স্টেশন থেকে তিনটি, বানিয়াখালী স্টেশন থেকে ৯টি, কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন থেকে ১৮টি, কোবাদক স্টেশন থেকে ৭টি ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের স্টেশনগুলো থেকে ২১টি নৌকার অনুমতিপত্র (পাস) দেওয়া হয়েছে। এসব পাস নিয়ে মৌয়ালরা চলে যান সুন্দরবনের গহীন মধু সংগ্রহ করতে। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত বছরের প্রথম দিনে খুলনা রেঞ্জে ১৬০টি ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের চারটি স্টেশন থেকে ৩৬৪টি পাস দেওয়া হয়েছিল, যা এ বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। কয়রা গ্রামের মৌয়াল সোহরাব হোসেন বলেন, দীর্ঘ অপেক্ষার পর মধু আহরণের জন্য অনুমতি পেয়েছি। সাতজনের বহর নিয়ে ১৫ দিনের জন্য বাজার-সদাই নিয়ে রওনা হচ্ছি। কিন্তু এ বছর ডাকাত দলের উৎপাত অনেক বেশ। তার ওপর আবার বৃষ্টি কম। বৃষ্টি না হলে ফুল ঝরে যায়, মধু জমে না। বৃষ্টি না হওয়ায় চাকে কেমন মধু হবে সেটা নিয়েও চিন্তিত। স্থানীয় জেলে-বাওয়ালী ও মৌয়ালরা বলেন, সুন্দরবনে ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েকটি বনদস্যু দল থাকায় তারা মধু আহরণে আগ্রহ হারাচ্ছেন। নিরিহ জেলে-বাওয়ালীরা বনদস্যুদের চাহিদা মতো মুক্তিপণ দিতে না পারায় হামলার শিকার হচ্ছেন। বনদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে বনে ঢুকলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। যার কারণে তারা আগের মতো স্বাচ্ছন্দ্যে সুন্দরবনে যেতে পারছেন না। কয়েকজন মৌয়াল বলেন, মৌসুমের শুরুতে সুন্দরবনে খলিশা ফুলের মধু আসে। এর ২০ থেকে ২৫ দিন পর আসে গরান ফুলের মধু। শেষে আসে কেওড়া ও ছইলা ফুলের মধু। এই তিন প্রজাতির মধুর মধ্যে সবচেয়ে ভালো ও দামি হচ্ছে খলিশার মধু। মৌসুমের প্রথম ফুলের মধু, যা দেখতে সাদা, গাঢ় ও অনেক বেশি মিষ্টি। তবে বৃষ্টি না হলে ফুল শুকিয়ে ঝরে যায়, মধু জমে না। এ বছর তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত মধু না পাওয়ার শঙ্কা আছে। মৌয়াল আলামীন সানা বলেন, ‘এলাকায় তেমন কোনো কাজকর্ম না থাকায় মহাজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে মধু কাটতে যাচ্ছি। মধু না পেলে চালানে মার খাবো, ঋণের বোঝা টানতে হবে। আবার সুন্দরবনে কয়েকটি ডাকাত দল আছে, তাদের কাছে ধরা পড়লে গুনতে হবে টাকা।’ একাধিক মৌয়াল বলেন, সুন্দরবনে মৌসুম শুরুর আগেই এক শ্রেণির অসাধু লোক জেলের ছদ্মবেশে মাছের পাস নিয়ে সুন্দরবনে ঢুকে চুরি করে মধু সংগ্রহ করে। একটি পরিপূর্ণ চাকে ৫ থেকে ৭ কেজি মধু পাওয়া যায়। কিন্তু চোরা মধু আহরণকারী আগে চাক কাটার কারণে যখন তারা বৈধভাবে পাস পান, তখন সুন্দরবনে ঢুকে মৌচাকে ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রামের বেশি মধু পাওয়া যায় না। মধু আহরণে প্রতি বছর বন বিভাগের একটি লক্ষ্যমাত্রা থাকে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ করা হয়েছিল ৪ হাজার ৪৬৩ কুইন্টাল। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা কমে ৩ হাজার ৮ কুইন্টাল হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরও কমে হয় ২ হাজার ৮২৫ কুইন্টাল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কিছুটা বেড়ে ৩ হাজার ১৮৩ কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয়েছিল। তবে চুরি করে আহরণ করা মধু বন বিভাগের হিসাবের বাইরে থাকে। অন্যদিকে আগাম চাক কাটার কারণে মৌসুমে মধুও কম পাওয়া যায়। এর ফলে বন বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। মধু আহরণ কারীরা বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আবারও সুন্দরবনে বনদস্যুদের অত্যাচার বেড়ে গেছে। ছোট-বড় মিলে বেশ কয়েকটি দস্যুদল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রায়ই শোনা যায়, বনদস্যুদের হাতে জিম্মি হচ্ছেন জেলে-বাওয়ালীরা। বনের গহীনে যেখানে মাধু আহরণ করা হয় সেখানে সাপ, বাঘসহ অন্যান্য ভয়ানক প্রাণীর উপস্থিতি যেমন থাকে, তেমনি বনদস্যুরাও থাকে। এসব কারণে আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে এবং জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। আমরা চাই সরকার এ বনদস্যুদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিক। যাতে জেলে-বাওয়ালী ও মৌয়ালরা বনে গিয়ে নিরাপদে মাছ-মধু আহরণ করতে পারেন। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এ জেড এম হাসানুর রহমান বলেন, সুন্দরবনে নির্বিঘ্নে মধু আহরণের জন্য বন বিভাগের টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া এবার বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য মৌয়ালদের সাবধানে চলাফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এ বছর পশ্চিম সুন্দরবনে ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল মধু ও ৬০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট